প্রকাশ :
বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছরের মর্যাদাপূর্ণ এশিয়া ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পুরস্কার পেয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার।
তাইওয়ানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান তাইওয়ান ফাউন্ডেশন ফর ডেমোক্রেসি (টিএফডি) প্রতিবছর মানবাধিকার রক্ষায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার দেয়। বুধবার টিএফডি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
অধিকারকে পুরস্কৃত করা প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের পক্ষে সোচ্চার অবস্থান নেওয়ার স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর মানবাধিকার সংস্থা অধিকারকে এশিয়া ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। হয়রানি, কারাভোগ ও নজরদারির মতো নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তিন দশক ধরে সংস্থাটি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
টিএফডি বলেছে, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারের কর্মকাণ্ডে নজর রাখা, গবেষণা ও সোচ্চার অবস্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রকে সংহত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে অধিকার।
সংস্থাটি ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিবছর মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। বাংলাদেশে নাগরিক অধিকার ও সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছতার মতো বিষয়গুলো নজরদারির পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতনের মতো ঘটনা তুলে ধরে আসছে সংস্থাটি।
টিএফডি ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের জন্য রোম সংবিধি অনুমোদনে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করার ক্ষেত্রে অধিকারের ভূমিকাও তুলে ধরে, যা পরবর্তীতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিপীড়নের তদন্তে অবদান রাখতে দেশটিকে নেতৃত্ব দেয়।
তাইওয়ানের সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত অলাভজনক সংস্থা টিএফডি বলেছে, আশা করা যায় যে পুরস্কারটি 'তাদের কাজ এবং একই ক্ষেত্রের লোকদের উৎসাহিত করবে' যাতে তারা 'তাদের প ্রয়াস ও অধ্যবসায় অগোচরে থাকেনি তা বুঝতে পারে'।
আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে তাইপেইতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবারের এশিয়া ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পুরস্কার দেওয়া হবে।
এ পুরস্কারের অর্থমূল্য এক লাখ মার্কিন ডলার। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার অব্যাহত প্রচেষ্টায় সহযোগিতার অংশ হিসেবে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পুরস্কারজয়ী প্রতিষ্ঠানকে এ অর্থ দেওয়া হয়।
মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান খান অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি এর সম্পাদক হিসাবে কাজ করছেন।
ওয়েবসাইট অনুসারে, অধিকারের প্রধান উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে-মানবাধিকার এবং এর বিভিন্ন অপব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে একটি প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রচার।
উল্লেখ্য, অধিকার ২০১৩ সালের ১০ জুন মতিঝিল শাপলা চত্বরের অভিযানের বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। এর দাবি ছিল ওই অভিযানে ৬১ জন মারা গেছে। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণ উল্লেখ করে নিহতদের নাম উল্লেখ করতে রাজি হয়নি।