প্রকাশ :
ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ফরম্যাটে বাজে পারফরমেন্সের পর আগামীকাল থেকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠিতব্য তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ঘুড়ে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
ওয়ানডে ক্রিকেট বাংলাদেশের জন্য সাচ্ছন্দ্যময় ফরম্যাট হলেও প্রতিপক্ষ হিসেবে টাইগারদের কাছে আফগানিস্তান সবসময়ই কঠিন।
যদিও এই ফরম্যাটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৬ ম্যাচ খেলে ১০টিতে জয় ও ৬টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। তারপরও নির্ভার হবার কোন উপায় নেই।
গত বছরের জুলাইয়ে সর্বশেষ দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিলো বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হার বরণ করেছিলো টাইগাররা।
নিজেদের পছন্দের ফরম্যাটে সিরিজ হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে বাজে অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিলো।
এ বছর তিনটি দ্বিপাক্ষীক তিনটি ওয়ানডে সিরিজ খেলে দু’টিতে জয় পেয়েছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান। শ্রীলংকা সফরে হারলেও নিজেদের ভেন্যু হিসেবে পরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে আয়ারল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতে নেয় আফগানরা। আইরিশদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ এবং প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো আফগানিস্তান।
এ বছর মাত্র একটি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। গত মার্চে ঘরের মাঠে শ্রীলংকার কাছে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরেছিলো টাইগাররা।
বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটার তাওহিদ হৃদয় মনে করেন এই ফরম্যাটে মানসিকভাবে চাঙা থাকবে বাংলাদেশ।
হৃদয় বলেন, ‘আমরা এই ফরম্যাটে সত্যিই ভালো খেলি। আশা করি আমরা এই সিরিজে ভাল শুরু করতে পারবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে আমাদের শুরুটা ভালো হতে হবে। আমরা যদি নিজদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি আমি মনে করি আমরা সিরিজ জিততে পারবো।’
তবে বাংলাদেশের চিন্তার কারন আফগানিস্তানের বাঁ-হাতি পেসার ফজলহক ফারুকি। বাংলাদেশের বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে ভয়ংকর রেকর্ড আছে তার। ফারুকির সামনে বাংলাদেশের বাঁ-হাতি ব্যাটারদের অসহায়ত্ব কয়েকবারই ফুটে উঠেছে। এবার ফারুকির সামনে টাইগাররা কেমন পারফরমেন্স করে সেটিই দেখার বিষয়।
এছাড়াও বাংলাদেশের টপ-অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার ইতিহাস তো আছেই। কালকের ম্যাচেও যে সেটি হবে না তা কিন্তু বলা যাবে না।
টপ-অর্ডারকে শক্তিশালী করতে ১৩ মাস পর বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে ডাকা হয়েছে তরুণ ব্যাটার জাকির হাসানকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো করতে চাইলে টপ অর্ডার ব্যাটারদের ভালো শুরু করা জরুরী বলে মনে করেন জাকির।
তিনি বলেন, ‘আমরা দল হিসেবে খেলতে চাই। আমি জানি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো করতে হলে টপ অর্ডার ব্যাটারদের থেকে ভালো শুরু প্রয়োজন।’
পাস্তিানের মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। টপ অর্ডার ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং শেষ চার টেস্টে হারের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে সিরিজটি ওয়ানডে ফরম্যাটের হওয়ায় বাংলাদেশকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে বলে মনে করেন জাকির।
তিনি বলেন, ‘এটা সত্য যে আমরা ভালো শুরু করতে পারছি না। টেস্ট ফরম্যাটে আমাদের ওপেনাররা ভালো করতে পারেনি। পরাজয়ের এটাই মূল কারণ। কিন্তু আরেকটি সিরিজ আসছে এবং সেটি হচ্ছে ওয়ানডে ফরম্যাট। এটি এমন ফরম্যাট যেখানে আমরা সবসময় ভালো খেলি। আশা করি আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সবকিছু হবে।’
১৩ জনের দল থেকে আপাতত একাদশ বাছাই করতে হবে বাংলাদেশকে। ভিসা জটিলতার কারণে এখনও দলের সাথে যোগ দিতে পারেননি স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং পেসার নাহিদ রানা।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মেহেদি হাসান মিরাজ (সহ-অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানা।
আফগানিস্তান দল : হাশমতুল্লাহ শাহিদি (অধিনায়ক), রহমত শাহ, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইকরাম আলিখিল, আবদুল মালিক, রিয়াজ হাসান, সেদিকুল্লাহ আতাল, দরবেশ রাসুলি, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান, নাঙ্গিয়াল খারোতি, এএম গাজানফর, নূর আহমেদ, ফজলহক ফারুকি, বিলাল সামি, নাভিদ জাদরান, ফরিদ আহমদ মালিক।