প্রকাশ :
আদালতের রায় ঘোষণার সাত দিন পর বিএনপির নেতা ডা. শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার রাতে নির্বাচন কমিশনের সচিব শফিউল আজিম স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়।আদালতের নির্দেশে ইসি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে।সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি শিরোনামে এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ও যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত, চট্টগ্রামে দায়ের করা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল মামলার গত ১ অক্টোবরের আদেশে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী ১ নম্বর বিবাদী মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে নির্বাচিত ঘোষণা বাতিল করে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী শাহাদাত হোসেনকে নির্বাচিত মেয়র ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। ওই সময় ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ করেন বিএনপির প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ফলাফল বাতিল চেয়ে মামলা করেন বিএনপির এ প্রার্থী। ফলাফল জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় চট্টগ্রাম নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ খাইরুল আমীন গত ১ অক্টোবর নির্বাচনে ডা. শাহাদাত হোসেন নির্বাচিত হয়েছন হিসেবে রায় দেন। একইসঙ্গে পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়। মামলায় বাদি দাবি করেন, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ফলাফল কারচুপি করেন। তিনি দাবি করেন, ৪ হাজার ৮৮৫টি বুথের মধ্যে মাত্র ২০টি বুথের ফলাফলের প্রিন্টেড& nbsp;কপি দেওয়া হয়। বাকিগুলোর ফলাফল হাতে লিখে দেওয়া হয়েছে, এতে প্রমাণ হয় যে ভোটের সংখ্যা পরিবর্তন করে জালিয়াতির মাধ্যমে তাঁর নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর আর কার্যালয়ে আসেননি। মেয়রকে অপসারণ করে ১৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। এরপর আদালত থেকে নতুন নির্দেশনা আসে। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন পান ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার ছিলেন মোট ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। নির্বাচনে ভোট পড়ে মাত্র ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ। ভোটের দিন হামলা, গোলাগুলি, প্রাণহানি ও ক্ষমতাসীনদের শক্তি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটে। এতে ভোটের উৎসব ম্লান হয়ে যায়। ভোট শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে কোনো ভোটই হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়।